অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।তিনি জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে একটি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন ও শ্রমমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নতিকরণে আমরা কাজ করছি। যার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনগণের অভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তবে সেই নতুন বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি শ্রমিকদের অবস্থা আগের মতোই থেকে যায়। আজকের স্লোগানটি আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।তিনি বলেন, শ্রমিক মালিকের সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক। পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব বলে বিশ্বাস করি।
শ্রমিকদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে মালিক শ্রমিকের ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। শ্রমিকের সম্ভাবনা বিকাশের মাধ্যমে দেশ গঠনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।
মালয়েশিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য লাংকাউই। ইউনেস্কো স্বীকৃত গ্লোবাল জিওপার্কের অন্তর্ভুক্ত এই দ্বীপপুঞ্জ প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চারের এক অপূর্ব সমন্বয়। সম্প্রতি চারদিনের সফরে ঘুরে দেখা হয়েছে এই স্বপ্নময় গন্তব্য, যেখানে পাহাড়, সৈকত ও ইতিহাস একসঙ্গে মিশে আছে।
যাত্রা ও প্রথম অভিজ্ঞতা
লাংকাউই পৌঁছানোর পর এয়ারপোর্ট থেকে একটি ট্যাক্সি নিয়ে সরাসরি হোটেলে পৌঁছানো হয়। এরপরই শুরু হয় প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর আত্মিক যোগাযোগ। সৈকতের হিম বাতাস আর চারপাশের প্রশান্ত পরিবেশ যেন আগমনের প্রথম মুহূর্তেই মুগ্ধ করে।
চেনাং বিচের রাতে আগুন আর সুরের ছন্দে মুগ্ধ দর্শকরা, ফায়ার শো যেন এক জীবন্ত রোমাঞ্চ!
চেনাং বিচের সন্ধ্যা ও ফায়ার শো
প্রথম সন্ধ্যাটি কাটে লাংকাউইয়ের বিখ্যাত পান্তাই চেনাং বিচে। সমুদ্রের ধারে বিনামূল্যে আয়োজিত ফায়ার শো দর্শনার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি করে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পর্যটকদের সুবিধার্থে সেখানে থাকা রেস্টুরেন্ট থেকে মাত্র একটি ড্রিঙ্ক অর্ডার করলেই সিটে বসে উপভোগ করা যায় শোটি। আগুন আর মিউজিকের মিশেলে তৈরি শোটি চলে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত।
পরদিন সকালে লাংকাউই স্কাই ক্যাবের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ২,৩২৩ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত Gunung Mat Cincang পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়ার এই কেবল কার যাত্রা পর্যটকদের জন্য এক দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সমুদ্র, পাহাড় ও সবুজ বন একসঙ্গে উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয় পুরো পথজুড়ে।
চূড়ায় উঠে দেখা যায় স্কাই ব্রিজ—বিশ্বের অন্যতম উঁচু ঝুলন্ত সাসপেনশন ব্রিজ। জানা যায়, ব্রিজটির পুরো স্টিল স্ট্রাকচার গ্রাউন্ডে তৈরি করে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পাহাড়ের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। এটিকে ধরে রেখেছে একটিমাত্র টাওয়ার ও স্ট্রং ক্যাবল। এখানেই শুটিং হয়েছে বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা “ডন”-এর শেষ দৃশ্য।
লাংকাউইয়ের থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে ডাইনোসরের মুখ থেকে পালানোর নাটকীয় দৃশ্য—মজা আর স্মৃতিতে ভরপুর মুহূর্ত!
থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে বাস্তব ও কল্পনার মিলন
স্কাই ব্রিজ ঘুরে এসে নিচে নামার পর দর্শনার্থীরা প্রবেশ করেন থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে। সেখানে বিশাল পেইন্টিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে মনে হয়, যেন বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার জগতে পা রাখা হয়েছে।
পরদিন সকালেই বুক করা হয় আইল্যান্ড হপিং ট্যুর। গাড়ি করে পৌঁছে যাওয়া হয় পিয়ারে, সেখান থেকে বোটে চড়ে একে একে ঘোরা হয় বেশ কয়েকটি দ্বীপে। এর মধ্যে প্রেগন্যান্ট মেইডেন আইল্যান্ড ছিল অন্যতম। দ্বীপটির একটি পাহাড়কে দূর থেকে দেখতে মনে হয় গর্ভবতী নারী শুয়ে আছেন।
পরে যাওয়া হয় ঈগল ওয়াচিং স্পটে, যেখানে আকাশ থেকে নেমে আসে একঝাঁক ঈগল—পর্যটকদের জন্য চরম রোমাঞ্চকর এক মুহূর্ত।
এখানেই জানা যায় ‘লাংকাউই’ নামটির উৎপত্তি—‘হেলাং’ অর্থ ঈগল, আর ‘কাউই’ মানে লালচে বাদামী রঙ। এখানকার আকাশে ওড়া ঈগলের রঙ থেকেই নামকরণ হয়েছে দ্বীপটির।
ঈগল ওয়াচিং স্পট
শেষ বিকেল: ফিরে দেখা চারদিনের ভ্রমণ
লাংকাউই ভ্রমণের শেষ বিকেলটি কাটে পান্তাই চেনাং বিচে। হোটেলের পাশেই অবস্থিত এই সৈকত পর্যটকদের মধ্যে দিনশেষে প্রশান্তির অনুভূতি এনে দেয়। সাদা বালি, নীল পানি আর নরম বাতাস যেন বিদায়ের আগেই হৃদয়ে গেঁথে যায়।
কেউ সমুদ্রে নেমে স্নান করছেন, কেউবা চুপচাপ বসে ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন—সবার মধ্যেই এক ধরনের আবেগ কাজ করছে। পরদিন সকালে ফিরে আসার প্রস্তুতি থাকলেও মনের মধ্যে রয়ে যায় একরাশ তৃপ্তি ও স্মৃতিময়তা।
পান্তাই চেনাং বীচ
উপসংহার
চারদিনের এই ভ্রমণে লাংকাউই শুধু একটি স্থান নয়, হয়ে উঠেছে এক অনুভূতির নাম। প্রকৃতি, ইতিহাস, আর রোমাঞ্চ একসঙ্গে যাদের আকর্ষণ করে—তাদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি আদর্শ গন্তব্য।
আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য হোটেল ও টিকিট বুক করতে চাইলে Agoda থেকে সহজেই বুকিং করুন—এক ক্লিকে শুরু হোক আপনার যাত্রা।
দুজনেই আছেন নিজেদের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়। যদিও এখনও তারাই ফুটবলবিশ্বের মহাতারকা। দীর্ঘ সময় বিশ্বের জায়ান্ট ক্লাবগুলোতে রোমাঞ্চকর দ্বৈরথ দেখানো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এখন ইউরোপ থেকে অনেক দূরে। তবে এখনও তাদের ফুটবল মাঠে ঝড় তোলা কিংবা শিরোপা জয়ের ক্ষুধা মেটেনি। গতকাল (বুধবার) রাতে ভিন্ন দুই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে নেমে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে মেসি-রোনালদো উভয়েরই।
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী খেলার মুহূর্তটা রাত ও ভোরে হলেও একইদিন রাতেই মূলত মাঠে নামেন দুই মহাতারকা। প্রথমে জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে জাপানের কাওয়াসাকি ফ্রন্তেলের মুখোমুখি হয় রোনালদোর দল আল নাসর। ৩-২ গোলে হেরে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। যেখানে এই পর্তুগিজ তারকা গোল তো পান-ইনি, উল্টো সুযোগ হাতছাড়া করেছেন যোগ করা সময়ে।
বয়সটা ৪০ হলেও ফুটবলারের ভূমিকায় রোনালদো যেন একে থোড়াই কেয়ার করেন। কয়েকদিন আগেই সৌদি ক্লাবটির জার্সিতে ৯৩৪তম গোল পেয়েছিলেন, ছুটছেন সেই চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে। ঘোষণা দিয়েছিলেন ১০০০ গোল করার। পেশাদার ফুটবলের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা তারকা সেমিতে স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর আবেগটা লুকাননি। আল-নাসরের হয়ে একটি শিরোপা জেতার আক্ষেপটা দীর্ঘ করেই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রোনালদো লিখেছেন, ‘কখনও কখনও স্বপ্নকে অপেক্ষা করতে হয়। আমি এই দল এবং পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত।’
সিআরসেভেনের সেই হতাশাগ্রস্ত ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা পর ফ্লোরিডার চেজ স্টেডিয়ামে খেলতে নামেন তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। তিনিও এদিন কোনো সুখকর চিত্র আঁকতে পারেননি। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে প্রথম লেগে হেরে বিদায়ের শঙ্কায় ছিলেন লিওনেল মেসিদের ইন্টার মায়ামি। তবে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও তাদের আশাটা জিইয়ে ছিল, বিশেষত দ্বিতীয় লেগ যে ঘরের মাঠে। কিন্তু মেসি-সুয়ারেজরা সেই ব্যবধান তো ঘুচাতেই পারলেন না, উল্টো ফিরতি লেগেও ৩-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারলেন।
২০২২ সালেই মেয়েদের ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ইংল্যান্ডের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছিল। আজ (বৃহস্পতিবার) ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আসন্ন টুর্নামেন্টের সময়সূচি ও সাতটি ভেন্যুর নাম ঘোষণা করেছে। আগামী বছরের ১২ জুন শুরু হয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর্দা নামবে ৫ জুলাই। ফাইনাল হবে ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
এর আগে ২০১৭ সালে সর্বশেষ লর্ডসে আইসিসি নারী বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল। যেখানে ভারতকে ৯ রানে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক ইংলিশরা। মেয়েদের আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৪ দিনে হবে ৩৩টি ম্যাচ। এই আসরে প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে ১২ করা হয়েছে। যেখানে ৬টি করে দল ভাগ হয়ে খেলবে দুই গ্রুপে। গত বছরের অক্টোবরে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আটে থাকা দলগুলো বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। বাছাইপর্ব খেলে উঠবে আরও ৪ দল।
আয়োজক ইংল্যান্ডের সঙ্গে ২০২৪ ওয়ানডে সুপার কাপে পারফরম্যান্সের সুবাদে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া দলগুলো হচ্ছে– অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ ছাড়া র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মেয়েরাও সেই সুযোগ পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশসহ বাকি দলগুলোকে খেলতে হবে বাছাইপর্ব।
লর্ডসে আজ আসন্ন বিশ্বকাপের ভেন্যু ও সূচি ঘোষণা করেন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের বিত্তশালী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজন প্রতিটি দলের জন্য আবেগীয় সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ। এখানে এমন ইভেন্ট অতীতেও স্মরণীয় হয়ে আছে। ২০১৭ আসরে লর্ডস দারুণ নারী ক্রিকেটে দারুণ মাইলফলক তৈরি করেছিল, তাই ফাইনালের জন্য এরচেয়ে উপযুক্ত ভেন্যু হতে পারে না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মাধ্যমে সমর্থকদের সঙ্গে আমরাও যেমন রোমাঞ্চিত, তেমনি ২০২৮ লস অ্যাঞ্জলস অলিম্পিকে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনের জন্যও পূর্ব-প্রদর্শনী।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসিবির প্রধান নির্বাহী ইয়ান গুল্ড, ইংল্যান্ড নারী দলের কোচ চার্লট এডওয়ার্ডস এবং দেশটির তারকা ক্রিকেটার ট্যামি ব্যুমন্ট, সোফিয়া ডাঙ্কলি, সোফি এক্লেস্টন, লরেন বেল ও ইংলিশ রাগবি তারকা ইলি কিলদুন্নে। লর্ডস ছাড়াও আসন্ন বিশ্বকাপের ভেন্যুগুলো হচ্ছে– ওল্ড ট্রাফোর্ড, হেডিংলি, এজবাস্টন, হ্যাম্পশায়ার বোল, দ্য ওভাল ও ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ড।
আপনার মতামত লিখুন
Array