চব্বিশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণআন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বীর শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকীতে তার কবর জিয়ারত ও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ায় শহীদ আবু সাঈদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়া ও মোনাজাত করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিব।
এ সময় রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল মালুম, সহ-সভাপতি এম এম মুসা, যুগ্ম সম্পাদক সালেহ মো. আদনান, যুগ্ম সম্পাদক তাইজুল ইসলাম, রংপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরীফ নেওয়াজ জোহা, সদস্য সচিব সুজনসহ জেলা বিএনপি ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে রংপুর নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সম্মুখ সড়কে বিভাগীয় ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মহা নায়ক আবু সাঈদের বিরোচিত আত্মদানকে স্মরণ করে সরকার এ দিনটি ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। একই সাথে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালনে রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে শহরের পৌরপার্ক এলাকার সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছান তারা।
সমাবেশে এসে উপস্থিত হয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাদের স্বাগত জানান।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে তাদের পদযাত্রা চলছে। আজকের কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে- ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা মঞ্চে থাকা সাউন্ড বক্স, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং উপস্থিত এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১টা ৩৫ মনিটের দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই : মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নাম দেওয়া হয়।
এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরে আজ সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা করা হয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতেও।
সকালে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির মো. সাজেদুর রহমান।
তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রা ও পথসভার কথা রয়েছে। সেখানে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা আসবেন বলে জানা গেছে। তাদের এ পদযাত্রা বানচালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকেরা সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় হতাহতের তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এদিকে, কাছাকাছি সময়ে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায় ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি বহরেও হামলা চালানো হয়। সেখানে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করেছিলেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সে সময় তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ইউএনওর ওপর হামলা চালানো হয়।
ইউএনও এম রকিবুল হাসান বিষিয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচি বানচালের জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা পথে পথে অবরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ কাজে বাধা দিতে গেলে আমার গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মালয়েশিয়ার লাংকাউই: প্রকৃতি ও রোমাঞ্চে ভরপুর চারদিন
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫, ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
[shared_counts]
মোস্তাকিম জনি
মালয়েশিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য লাংকাউই। ইউনেস্কো স্বীকৃত গ্লোবাল জিওপার্কের অন্তর্ভুক্ত এই দ্বীপপুঞ্জ প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চারের এক অপূর্ব সমন্বয়। সম্প্রতি চারদিনের সফরে ঘুরে দেখা হয়েছে এই স্বপ্নময় গন্তব্য, যেখানে পাহাড়, সৈকত ও ইতিহাস একসঙ্গে মিশে আছে।
যাত্রা ও প্রথম অভিজ্ঞতা
লাংকাউই পৌঁছানোর পর এয়ারপোর্ট থেকে একটি ট্যাক্সি নিয়ে সরাসরি হোটেলে পৌঁছানো হয়। এরপরই শুরু হয় প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর আত্মিক যোগাযোগ। সৈকতের হিম বাতাস আর চারপাশের প্রশান্ত পরিবেশ যেন আগমনের প্রথম মুহূর্তেই মুগ্ধ করে।
চেনাং বিচের রাতে আগুন আর সুরের ছন্দে মুগ্ধ দর্শকরা, ফায়ার শো যেন এক জীবন্ত রোমাঞ্চ!
চেনাং বিচের সন্ধ্যা ও ফায়ার শো
প্রথম সন্ধ্যাটি কাটে লাংকাউইয়ের বিখ্যাত পান্তাই চেনাং বিচে। সমুদ্রের ধারে বিনামূল্যে আয়োজিত ফায়ার শো দর্শনার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি করে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পর্যটকদের সুবিধার্থে সেখানে থাকা রেস্টুরেন্ট থেকে মাত্র একটি ড্রিঙ্ক অর্ডার করলেই সিটে বসে উপভোগ করা যায় শোটি। আগুন আর মিউজিকের মিশেলে তৈরি শোটি চলে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত।
পরদিন সকালে লাংকাউই স্কাই ক্যাবের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ২,৩২৩ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত Gunung Mat Cincang পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়ার এই কেবল কার যাত্রা পর্যটকদের জন্য এক দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সমুদ্র, পাহাড় ও সবুজ বন একসঙ্গে উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয় পুরো পথজুড়ে।
চূড়ায় উঠে দেখা যায় স্কাই ব্রিজ—বিশ্বের অন্যতম উঁচু ঝুলন্ত সাসপেনশন ব্রিজ। জানা যায়, ব্রিজটির পুরো স্টিল স্ট্রাকচার গ্রাউন্ডে তৈরি করে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পাহাড়ের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। এটিকে ধরে রেখেছে একটিমাত্র টাওয়ার ও স্ট্রং ক্যাবল। এখানেই শুটিং হয়েছে বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা “ডন”-এর শেষ দৃশ্য।
লাংকাউইয়ের থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে ডাইনোসরের মুখ থেকে পালানোর নাটকীয় দৃশ্য—মজা আর স্মৃতিতে ভরপুর মুহূর্ত!
থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে বাস্তব ও কল্পনার মিলন
স্কাই ব্রিজ ঘুরে এসে নিচে নামার পর দর্শনার্থীরা প্রবেশ করেন থ্রিডি আর্ট গ্যালারিতে। সেখানে বিশাল পেইন্টিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে মনে হয়, যেন বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার জগতে পা রাখা হয়েছে।
পরদিন সকালেই বুক করা হয় আইল্যান্ড হপিং ট্যুর। গাড়ি করে পৌঁছে যাওয়া হয় পিয়ারে, সেখান থেকে বোটে চড়ে একে একে ঘোরা হয় বেশ কয়েকটি দ্বীপে। এর মধ্যে প্রেগন্যান্ট মেইডেন আইল্যান্ড ছিল অন্যতম। দ্বীপটির একটি পাহাড়কে দূর থেকে দেখতে মনে হয় গর্ভবতী নারী শুয়ে আছেন।
পরে যাওয়া হয় ঈগল ওয়াচিং স্পটে, যেখানে আকাশ থেকে নেমে আসে একঝাঁক ঈগল—পর্যটকদের জন্য চরম রোমাঞ্চকর এক মুহূর্ত।
এখানেই জানা যায় ‘লাংকাউই’ নামটির উৎপত্তি—‘হেলাং’ অর্থ ঈগল, আর ‘কাউই’ মানে লালচে বাদামী রঙ। এখানকার আকাশে ওড়া ঈগলের রঙ থেকেই নামকরণ হয়েছে দ্বীপটির।
ঈগল ওয়াচিং স্পট
শেষ বিকেল: ফিরে দেখা চারদিনের ভ্রমণ
লাংকাউই ভ্রমণের শেষ বিকেলটি কাটে পান্তাই চেনাং বিচে। হোটেলের পাশেই অবস্থিত এই সৈকত পর্যটকদের মধ্যে দিনশেষে প্রশান্তির অনুভূতি এনে দেয়। সাদা বালি, নীল পানি আর নরম বাতাস যেন বিদায়ের আগেই হৃদয়ে গেঁথে যায়।
কেউ সমুদ্রে নেমে স্নান করছেন, কেউবা চুপচাপ বসে ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন—সবার মধ্যেই এক ধরনের আবেগ কাজ করছে। পরদিন সকালে ফিরে আসার প্রস্তুতি থাকলেও মনের মধ্যে রয়ে যায় একরাশ তৃপ্তি ও স্মৃতিময়তা।
পান্তাই চেনাং বীচ
উপসংহার
চারদিনের এই ভ্রমণে লাংকাউই শুধু একটি স্থান নয়, হয়ে উঠেছে এক অনুভূতির নাম। প্রকৃতি, ইতিহাস, আর রোমাঞ্চ একসঙ্গে যাদের আকর্ষণ করে—তাদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি আদর্শ গন্তব্য।
আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য হোটেল ও টিকিট বুক করতে চাইলে Agoda থেকে সহজেই বুকিং করুন—এক ক্লিকে শুরু হোক আপনার যাত্রা।
আপনার মতামত লিখুন
Array